পথ কুকুর বা বিড়াল মারার শাস্তি কী?

Date:

- Advertisement -

পাবনার ঈশ্বরদীতে সদ্যজাত আটটি কুকুর ছানা বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে মেরে ফেলার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন বেশ আলোচিত। সন্তান হারিয়ে মা কুকুরের ছোটাছুটি এবং আর্তনাদের ভিডিও অসংখ্যবার শেয়ার হয়েছে।

এরআগে এ মাসের শুরুতেও বগুড়াতেও একটি বিড়ালকে জবাই করে হত্যা ও পোড়ানোর ঘটনায় বেশ আলোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন নিষ্ঠুরতার আরও নজির রয়েছে বাংলাদেশে।

এর পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মালিকবিহীন এসব পথকুকুর বা বিড়ালকে হত্যা, নির্যাতন বা আঘাত করলে দেশের আইনে আদৌ শাস্তির বিধান আছে কি না? পথকুকুরের নিরাপত্তা বা আইনি প্রতিকার সাধারণ ব্যক্তি নিজে চাইতে পারবে কি না? না কি পুলিশই নিজে থেকে ব্যবস্থা নিতে পারবে?

পথবিড়াল বা কুকুরের হত্যার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি সরাসরি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য মো. এমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশের প্রাণি আইন যেটা আছে সেটাতো আসলে খুবই দুর্বল। আমরা জিডি করার পরে পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছিলাম। তারা বরাবরই বলছিলে এটা ধর্তব্যের বাইরে অপরাধ।

বাংলাদেশে প্রাণি নির্যাতন সম্পর্কিত প্রায় একশ বছরের পুরোনো ১৯২০ সালের ‘দ্য ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমেলস অ্যাক্ট’ বাতিল করে ২০১৯ সালে প্রাণি কল্যাণ আইন প্রণয়ন করা হয়।

আইনজীবীরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রাণি কল্যাণ আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত মামলা গ্রহণ করবে না।

অর্থাৎ, চাইলেই যে কোনো ব্যক্তি এই ধরনের অপরাধের জন্য আইনি প্রতিকার বা মামলা করতে পারবেন না।

আইনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ ব্যতীত, কোনো আদালত এই আইনের অধীন কৃত কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাকিব মাহবুব বিবিসি বাংলাকে বলেন, এইটার (আইনের) প্রয়োগ সিটিজেনের হাতে না। এখানে কর্তৃপক্ষের সংজ্ঞায় আছে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার নিকট থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অধিদপ্তরের কোনো ভেটেরিনারি সার্জন। মানে অধিদপ্তরের লোক ছাড়া আপনি মামলা করতে পারবেন না। মূলত প্রাণি কল্যাণ আইনের বাধা এখানে।

এই আইনের (পেনাল কোড) ৪২৯ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি প্রাণি হত্যা করে বা ক্ষতি করে এবং যে কোনো প্রাণির মূল্য যদি ৫০ টাকা বা তার বেশি হয় তাহলে ওই ব্যক্তির পাঁচ বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

এই আইনজীবী আরও বলছেন, একটা রাস্তার কুকুর বা বিড়ালের মূল্য কিভাবে নির্ধারণ হবে? সেতো কারো মালিকানাধীন গবাদি পশু না। সেক্ষেত্রে এই ধারাও প্রমাণ করা কষ্টকর। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আসলে আপনি প্রমাণ করতে পারবেন না।

ফলে এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের প্রাণি কল্যাণ আইন থাকলেও তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

‘কেননা সেখানেই মালিকবিহীন প্রাণি হত্যা করা যাবে না সেটা বলা হয়েছে। সেটা বলছে ঠিকই কিন্তু প্রয়োগ আবার নাগরিকের কাছে দেয় নাই। প্রয়োগ আবার অধিদপ্তরের কাছে। কর্তৃপক্ষ এমন কোনো মামলা করেছে তা আমার জানা নাই।’

- Advertisement -

Subscribe

সর্বাধিক পঠিত

আরও
Related

পাকিস্তান সিরিজের জন্য বাংলাদেশের দল ঘোষণা

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছে পাকিস্তান...

ব্যাপারটাকে ভীষণ এনজয় করি: সৌরভ

সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে তারকাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা নিত্যদিনের ঘটনা।...

জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর: প্রধান উপদেষ্টা 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয়...

খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন: ডা. জাহিদ

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা...