কোন অভিযোগে হাসিনাকে কী সাজা দেওয়া হয়েছে

Date:

- Advertisement -

শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে প্রতিটি প্রমাণিত হয়েছে বলে রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এগুলোর মধ্যে এক নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছে পাঁচটি অভিযোগ তিনটি কাউন্টে ভাগ করে সাজা প্রদান করা হয়েছে আসামিদের।

তাদের বিরুদ্ধে গঠন করা প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতি-পুতি বলে উল্লেখ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায়’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী’ ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর আক্রমণ করে। প্ররোচনা, উস্কানি, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, ষড়যন্ত্রের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে এতে।

এই অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

কারণ তিনি অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল তাকে ‘ইমপ্রিসনমেন্ট টিল ন্যাচারাল ডেথ’ অর্থাৎ আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে।

তিনটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

এর মধ্যে দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

চার নম্বর অভিযোগে, গত বছরের পাঁচ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা ছয় জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পাঁচ নম্বর অভিযোগ আশুলিয়াতে জীবিত একজনকে সহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে গঠন করা হয়েছে।

এছাড়া ঢাকার চাঁনখার পুলে ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়াতে জীবিত একজনসহ ছয়জনকে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এদিকে, এই মামলার একমাত্র গ্রেফতার আসামি ও ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে প্রথম অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

কিন্তু অপরাধের ব্যাপকতা এবং যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, যেসব অপরাধ তিনি করেছেন সেগুলোর জন্য তিনি সর্বোচ্চ শাস্তির যোগ্য।

কিন্তু যেহেতু তিনি এই মামলাকে অর্থবহ করে তোলার জন্য সাহায্য করেছেন সে বিষয় বিবেচনায় তিনি ন্যুনতম সাজা পাবেন।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে আরো বলেছে, তিনি সকল এট্রোসিটিজের জন্য দায়ী। কিন্তু ঘটনার বিবরণ পূর্ণাঙ্গভাবে ডিসক্লোজ করেছেন তিনি।

এসব বিষয় বিবেচনায় সাবেক এই আইজিপিকে ট্রাইব্যুনাল পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

- Advertisement -

Subscribe

সর্বাধিক পঠিত

আরও
Related

রায়ের পর শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ

মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর পলাতক...

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী...

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে সালাহউদ্দিনের প্রতিক্রিয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ...

খুনি হাসিনার মামলার রায় আন্তর্জাতিক মানের: জামায়াত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন...