টাঙ্গাইলের সখীপুরে মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সেই দুই ছাত্রী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের গত ৩ জুলাই সকালে সায়মা ও লাবনী নামের দুই পরীক্ষার্থী মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়। পৃথক দুটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গত ২ জুলাই দিবাগত রাতে।
সায়মা আক্তার হাতিয়া গ্রামের মো. রায়হান খানের মেয়ে এবং লাবনী আক্তার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে। মায়ের মৃত্যুর শোক বুকে চেপে রেখে তারা পরীক্ষার হলে উপস্থিত হয়েছিলেন।
সায়মা হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী এবং সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয়। অন্যদিকে লাবনী সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২ জুলাই দিবাগত রাত ৩টার দিকে সায়মার মা শিল্পী আক্তার (৪০) নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। একই রাতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান লাবনীর মা সফিরন বেগম (৪৫)।
দুজনেই পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান। শোকের সময় ভেঙে পড়লেও আত্মীয় স্বজন ও শিক্ষকদের সাহচর্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় তারা।
হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, সায়মার মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ঘটনাটি সত্যিই হৃদয়বিদারক। তিনি আরও জানান, সায়মা এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৭৫ পেয়েছে।
সানস্টার ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন বলেন, লাবনীর মায়ের মরদেহ রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মানসিকভাবে খুব কঠিন বিষয়। তবুও ও যে সাহস দেখিয়েছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এবারের পরীক্ষায় লাবনী জিপিএ ৪.৫৪ পেয়েছে।