আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে সরব হয়ে উঠেছে বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শহর, গ্রাম, পাড়া-মহল্লা জুড়ে চলছে গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ আর উঠান বৈঠক।
বিগত স্বৈরশাসন আমলের পর প্রথম আসন্ন নির্বাচনে মাগুরার ২টি আসনে বিভিন্ন দলের নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন কয়েকজন প্রার্থী। মাগুরা ২ আসনে সরব উপস্থিতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নের। তিনি ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
স্থানীয় বাজার, গ্রামাঞ্চল ও মহল্লায় বিএনপির প্রতীক ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন নিয়মিত। সঙ্গে রয়েছেন দলের স্থানীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা, যোগ দিয়েছেন আপামর জনতা। পাড়া-মহল্লায় গিয়ে ভোটারদের কাছে বিএনপির উন্নয়ন ভাবনা তুলে ধরছেন, তুলে ধরছেন তারেক রহমানের ঘোষিত ’রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’।
নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম নয়ন বলেন, ইতোমধ্যেই মাগুরা-২ আসনে বিএনপির পক্ষে জনস্রোত তৈরি হয়েছে। জনগণের দোয়া ও সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। জনগণকে সাথে নিয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করবো ইনশাআল্লাহ।

দলের খারাপ সময়ে রাজপথে সরব থাকা নয়ন ছিলেন যুবদলের আন্দোলনের অন্যতম সাহসী মুখ। দলীয় রাজনীতিতে নয়নের ভূমিকা বরাবরই চোখে পড়ার মতো। গত ১৬ বছর কারাবরণ থেকে সব ধরনের দমন-পীড়ন সহ্য করেছেন যুবদলের আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে থাকা এই নেতা।

নয়নের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুরের নহাটা ইউনিয়নের পানিঘাটা গ্রামে। তবে তার রাজনীতির শুরু ঢাকায়, মোহাম্মদপুর ছাত্রদলের হাত ধরে। রাজনৈতিক দূরদর্ষিতায় খুব দ্রুতই তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। পরে সাহসী নেতৃত্বের কারণে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য ও মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব মনোনীত করেন।
নয়ন জানান, স্বৈরাচার সরকারকে হটাতে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ১৯ বার তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। মিথ্যা মামলা হয়েছে শত শত। ২০১৬ সালে মগবাজার মোড় থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি এবং অমানবিক নির্যাতন করে মৃত ভেবে ঢাকা মেডিকেলে ফেলে রেখেছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও জানান, একটু সুস্থ হওয়ার পর পুলিশ আবার গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে হাত পায়ের নখ উপড়ে ফেলাসহ নানাভাবে অমানবিক শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করে। সবশেষ, ২৪-এর আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী যুবদল-এর ব্যানারে যুক্ত হয়ে অংশ নেন শেখ হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনে। টিয়ারগ্যাস, লাঠিচার্জ ও গুলির মুখে থেকেও সহযোদ্ধাদের মনোবল ধরে রেখেছেন ফ্রন্টলাইনে থেকে।

দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমানে সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন নির্বাচনমুখী। ফলে বিগত ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে থাকা নেতাদের পাশাপাশি নির্বাচনি মাঠে জায়গা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন নিষ্ক্রিয়রাও। তারাও এখন নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে টানতে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরবতা দেখাচ্ছেন তৃণমূলে।
দলের সার্বিক নির্বাচনি প্রস্তুতিতে এবার মূলত প্রাধান্য পাবে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, শ্রমিক দল এবং অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দল থেকে উঠে আসা তরুণ নেতারা। এ ছাড়া দলের সাবেক এমপিদের মধ্যে যারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তারাও নির্বাচনের জন্য দলের বিবেচনায় থাকার ইঙ্গিত পেয়েছেন। দলীয় মনোনয়নে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ত্যাগী ও নির্যাতিতদের ধানের শীষ প্রতীকে মূল্যায়ন করবে বলে আশাবাদী দলীয় নেতাকর্মীরা।

