এই ঈদুল আজহার, মাস্তুল ফাউন্ডেশন দেশের সুবিধাবঞ্চিতদের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতি বছর মাস্তুল ফাউন্ডেশন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করে থাকে। এই বছর, গাজার চলমান মানবিক সংকট এবং সেখানকার মানুষের চরম দুর্দশা বিবেচনা করে, মাস্তুল ফাউন্ডেশন কোরবানির ফান্ডের একটি অংশ গাজাবাসীদের জন্য উৎসর্গ করেছে। মিশরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনি গাজা শরণার্থী ও গাজার ভিতরে দেইর আল বালাহ ক্যাম্প, খান ইউনুস ক্যাম্পে অবস্থিত শরণার্থীদের এই সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া হয়েছে ।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, জনাব কাজী রিয়াজ রহমান, এই প্রসঙ্গে বলেন, “কোরবানি শুধু একটি ধর্মীয় ইবাদত নয়, এটি ত্যাগের মহিমা এবং সহমর্মিতার প্রতীক। বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে আমরা সব সময় ছিলাম এবং থাকব। তবে এই মুহূর্তে গাজার পরিস্থিতি আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। সেখানকার মুসলিম ভাই-বোনেরা চরম দুর্দশার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি, এই কোরবানির মাধ্যমে আমরা তাদের মুখে সামান্য হলেও হাসি ফোটাতে পেরেছি এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।”
শুধু তাৎক্ষণিক সাহায্য নয়, মাস্তুল ফাউন্ডেশন গাজার এতিম শিশুদের শিক্ষা, বিধবাদের ক্ষমতায়ন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন এই মজলুম ভাইবোনের সাহায্য করে যেতে পারি সবসময়।
মাস্তুল ফাউন্ডেশন বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধআশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এয়াতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাহিরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারের অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরন দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মাস্তুল এইড’ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা দিয়ে সাবলম্বী করছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষন কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাহিরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০০ এর অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা, যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার ব্যাবস্থা হয়।
এবছর থেকে মাস্তুল ফাউন্ডেশনে দানে সকল দাতারা কর রেয়াত পাবেন।