গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়ন করা সম্ভব হবে না। এখানে গণঅভ্যুত্থানের রাজনীতি ও মওলানা ভাসানীর দিশা খুব জরুরি। আমরা রাষ্ট্রকে যে একটা গণতান্ত্রিক জায়গায় দাঁড় করাতে চাচ্ছি, তার প্রাথমিক ভিত্তি হতে হবে ন্যায়বিচার।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত মওলানা ভাসানীর ৪৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আগে ন্যায় বিচার হয়নি বলে অভ্যুত্থান হয়েছে। এখনো যদি আমরা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, শুধুমাত্র ফ্যাসিস্টদের গালাগাল এবং স্থাপনা উৎখাত করলে ফ্যাসিস্ট দূর করা সম্ভব নয়। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়ন করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য নির্বাচনের প্রয়োজন। আমরা জনগণের পক্ষের শক্তি হয়ে থাকতে চাই। একটি-দুটি সিটের জন্য আমরা কারও পেছনে হাঁটছি না। ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে যে যুগপৎ লড়াই করেছি, সেই কাজ সম্পূর্ণ করা পর্যন্ত আমরা আমা দের কর্তব্য পালন করবো।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকায় ভাসানী জনগণকে আন্দোলনে যুক্ত করার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, তা অনুপ্রেরণাদায়ক হলেও বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির চরিত্র ভিন্ন। মান্না জানান, আজকের বাস্তবতায় তিনি নতুন কোনো অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা দেখছেন না। গণতন্ত্র উত্তরণের পথই হলো একটি সফল জাতীয় নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, এখন আবারো একটি গণঅভ্যুত্থান হওয়ার কোনো লক্ষণ আমি দেখি না। এখন প্রয়োজন একটি নির্বাচন। একটি সাকসেসফুল নির্বাচন আমাদেরকে গণতন্ত্র উত্তরণের অর্ধেকটা পথ পার করে দিতে পারে। নির্বাচন কি একটা গণঅভ্যুত্থান হতে পারে? নির্বাচন কোনো গণঅভ্যুত্থান হতে পারে না। এই নির্বাচন আগের যেকোনো সামগ্রিক পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয় নয়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, এই সরকারের ওপর আস্থা রেখে আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারি কিনা, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমরা যদি কারও সাথে জোট করি সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু, সরকারের তো আচরণ নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন। সরকারের আচরণে আমরা সেটি দেখছি না। সরকারের কর্মকাণ্ড মোটেও সন্তোষজনক নয়। আমরা চাই আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়। কিন্তু সেই আলামতও দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের প্রতি এবং দেশের মানুষের প্রতি যে ভালোবাসা মওলানা ভাসানীর ছিল, এসরকারের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এই দিনটি পালন করা উচিত ছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হবে। গত ১৫ বছরের হাসিনার পার্লামেন্টের মতো পার্লামেন্ট হলে গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লব মলিন হয়ে যাবে।
আলোচনা সভায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ গণতন্ত্র মঞ্চের আরও অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

