চারদিনের সফরে এই মুহূর্তে লন্ডনে অবস্থান করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরের শেষ দিকে আগামী ১৩ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসার কথার তার। এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে। আমি বিশ্বাস করি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে যে বৈঠক হতে যাচ্ছে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যেই ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। জাতি প্রত্যাশা করে, যৌক্তিক সময়েই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার মাধ্যমেই নির্বাচনসহ সব রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব।
এ সময় ভারতের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ভারত বাংলাদেশের প্রতি ভয়ংকর বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের তারা হিংস্র হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় পুশইনের হিড়িক পড়েছে। প্রশ্ন করি, বাংলাদেশ কি বর্জ্য ফেলার জায়গা?
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে বিদেশি বানিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টার বিরুদ্ধে শুধু প্রতিবাদ নয়, প্রয়োজন হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ভারতকে মনে রাখতে হবে—অত্যাচার আর নিপীড়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনাও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেনি।
সম্প্রতি ভারতসহ বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির খবরকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ভারতে ইতোমধ্যেই ৭ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশেও আক্রান্তের খবর এসেছে এবং একজন মারা গেছেন। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি বা ভূমিকা একেবারেই উল্লেখযোগ্য নয়।
এ সময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু মারাত্মক রূপ নিচ্ছে। জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। এর মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে।
এছাড়া ঈদযাত্রাকে ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ঈদের ছুটিতে বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে প্রায় ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসন আরও সক্রিয় হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো সম্ভব হতো। ঈদের সময় সমাজবিরোধীদের দৌরাত্মও দেখা গেছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে নির্ভয়ে ঈদ উদযাপনই হতে পারতো প্রকৃত আনন্দ। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি জনগণকে তা থেকে বঞ্চিত করেছে।