বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই পুনর্জাগরণ-২০২৫ পালিত হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনের শহিদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সম্প্রতি বরিশাল শিল্পকলা অ্যাকাডেমির হলরুমে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আহত আন্দোলনকারীদের পক্ষ আলোচনায় অংশ নিয়ে মাসুম বিল্লাহ তুলে ধরেন সংগ্রামের পেছনের ত্যাগ-তিতিক্ষা, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ এবং একটি সম্মানজনক জীবনের প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, আমরা যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলাম, তাদের একমাত্র প্রত্যাশা, সম্মানজনক কর্মজীবন। আমরা কোনো ধরনের কোটাভিত্তিক সুবিধা চাই না। চাই এমন একটি সিস্টেম, যেখানে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সব নাগরিকের জন্য সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, যারা একসময় অভাব-অনটনের সঙ্গে লড়ছিলেন, তারা আজ আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে ধনসম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এর ফলে প্রকৃত যোদ্ধারা হারিয়ে যাচ্ছেন অবহেলার অন্ধকারে। এই বৈষম্য আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি। জনগণের শক্তিকে সংগঠিত রেখে দুর্নীতি, অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি দেশ সত্যিকারভাবে এগিয়ে যেতে চায়, তবে এই চেতনার ধারকদের পাশে দাঁড়াতেই হবে।
বিশ্ব রাজনীতির প্রসঙ্গে ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে বক্তব্য দেন মাসুম। তিনি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানবিক রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশের উচিত তাদের প্রতি আরও সরব ও সহানুভূতিশীল ভূমিকা পালন করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার (অতিরিক্ত সচিব)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং বিভাগীয় পুলিশ সুপার। সভাপতিত্ব করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে জুলাই আন্দোলনের শহিদ ও আহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকেরা মনে করেন, এই আয়োজন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের ইতিহাসচর্চা, যেখানে ত্যাগ ও আত্মবলিদান যথার্থ মর্যাদা পায়।

