জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম তরতাপাড়ায় প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
রোববার (১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কূপটি ২,৬০০ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৪৪১ থেকে ১,৪৪৫ মিটার স্তর থেকে ৭.২ মিলিয়ন পিএসআই চাপে গ্যাস নির্গত হচ্ছে। ওই স্তরের ওপরে আরও একটি স্তর রয়েছে, সেখানেও গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় গ্যাসের মজুত সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে তেল বা অন্য কোনো খনিজ পদার্থের উপস্থিতিও পরীক্ষা করে দেখা হবে।
বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, তরতাপাড়ায় গ্যাসের সম্ভাবনা প্রথম ধরা পড়ে ১৯৮০ সালে একটি সিসমিক জরিপে। এরপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পুনরায় সিসমিক ডেটা সংগ্রহ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ক্লোজ-গ্রিড সিসমিক সার্ভে করা হয়। সেই তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন কার্যক্রম শুরু করে বাপেক্স।
বাপেক্স আশাবাদী, প্রত্যাশিত হারে গ্যাস পাওয়া গেলে কূপটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬,৭০০ কোটি টাকা হতে পারে।
প্রকল্প পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিভিন্ন প্রযুক্তিগত জটিলতা ও বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য সময় লাগে। সঠিক বিশ্লেষণ শেষে জানা যাবে গ্যাস উত্তোলনের প্রকৃত সম্ভাবনা।’
এদিকে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিজ এলাকায় গ্যাসের খোঁজ মেলায় আনন্দে ভাসছে তরতাপাড়ার মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, এ প্রকল্প শুধু জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে না, বরং এ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের নতুন দরজাও খুলবে।
তিন মাস মেয়াদি এ অনুসন্ধান প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়েছিলো ১৬৮ কোটি টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিন হাজার মিটার পর্যন্ত খনন করা হবে। যদি ৪০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুত পাওয়া যায়, তাহলে তা জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহে সক্ষম হবে।
বাপেক্স আশা করছে, তরতাপাড়ায় সফলতা পাওয়া গেলে যমুনা নদীর অপর পাড়েও গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি হবে।